মাহমুদ হাসান খান রোমেলঃ বই ও প্রকাশনা শিল্প একটি সংস্কৃতি বিকাশের এবং প্রচারের মাধ্যম। বই হলো মানুষের জীবনের অন্যতম অংশ। ভালভাবে বললে বই হচ্ছে জ্ঞানের এক অপরিসীম ভান্ডার। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও বই অনুরাগী সেটি সকলেই জানে। কিন্তু হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল-২ এর ২য় তলায় বর্হিগমন লাউঞ্জে র্যাম্প-৩ এর উত্তর পাশে ৫০ (পঞ্চাশ) বর্গফুট জায়গায় অবস্থিত বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকস নামের একমাত্র বইয়ের দোকানটি রয়েছে চরম অবহেলায়।
২০১৫ সালের জুন মাসে আবেদন করার পর ২০১৭ সালের মে মাসে ইজারা পাওয়া বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকসকে শুরু থেকেই হতে হয়েছে অবহেলার স্বীকার। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল-২ এর ২য় তলায় বর্হিগমন লাউঞ্জের উত্তর পাশের শেষ প্রান্তে মাত্র ৫০ (পঞ্চাশ) বর্গফুট বরাদ্দ করা হয় বইয়ের দোকানের জন্য। বিশ্বের কোন দেশের বিমানবন্দরে এত ছোট আকারে বইয়ের দোকান নাই। ফাস্ট ফুডসহ বিভিন্ন দোকানের জন্য বৃহৎ আকারে জায়গা বরাদ্দ করা হলেও বইয়ের দোকানটির ব্যাপারে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ খুবই উদাসীন। ২০১৮ সালে বিমান বন্দরের টার্মিনাল-১ অংশে বইয়ের দোকানটিকে বড় আকারে স্থান দেবার আবেদন করা হলে দোকানটিকে স্থান পরিবর্তন কিংবা বড় আকারে স্থান বরাদ্দ না করে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ দোকানটির ইজারামূল্য ৩০% কমিয়ে দেয়। যা ২০১৯ সালের মে মাস থেকে কার্যকর হয়।
চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে করোনা ভাইরাসের কারনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকস নামের একমাত্র বইয়ের দোকানটি বন্ধ আছে। বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর কাছে করোনাকালীন সময়ে ৬ মাসের ভাড়া মওকুফ এর আবেদন করা হলেও তার কোন সদুত্তর এখনও পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকস এর স্বত্বাধিকারী ভায়লেট লীনা বায়েন বলেন, একজন নারী উদ্যোক্তা হিসাবে আমার বইয়ের দোকানটি বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে প্রচার করে চলেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জীবনীসহ মুক্তিযুদ্ধ, ইতিহাস, সাহিত্যভিত্তিক বিভিন্ন বই বিক্রয় করার ফলে বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকস বিদেশী পর্যটকদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। মিষ্টি, হস্তশিল্প, ব্যাংক, একাধিক ফাষ্টফুডসহ নানা ধরনের দোকানসমূহ বর্হিগমন লাউঞ্জে আকর্ষণীয় স্থানে ইজারা প্রদান করা হলেও আমার বইয়ের দোকানটি অজ্ঞাত কারনে কিছুটা ভিতরে ইজারা প্রদান করা হয়েছে। ফলে অনেকেরই বিমান বন্দরের একমাত্র বইয়ের দোকানটি চোখে পড়ে না। তারপরও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিদেশী পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে লোকসান হবার পরও আমি বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকস দোকানটি চালু রেখেছি। বর্তমানে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের টার্মিনাল-১ এর ২য় তলায় বর্হিগমন লাউঞ্জে ১০০ (একশত) বর্গফুট জায়গা আমার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কালচার এন্ড বুকসকে হস্তশিল্প ও বইয়ের দোকান করার জন্য বরাদ্দ প্রদান করা হলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিদেশী পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে যেমনিভাবে সক্ষম হবো, ঠিকতেমনিভাবে আমার ব্যবসায়িক লোকসান কমানোও সম্ভব হবে। এছাড়া করোনাকালীন সময়ের কথা বিবেচনা করে তিনি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর কাছে করোনাকালীন সময়ে ৬ মাসের ভাড়া মওকুফ করার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এর সাথে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলেও কেউ কথা বলতে রাজি হননি।