মো: জোনায়েত হোসেন: ফাইনালের আগে সবচেয়ে জমজমাট লড়াইটা হতে যাচ্ছে সম্ভবত দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায়। মুখোমুখি দুই ল্যান্ড। কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত দুই ল্যান্ড- ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড। এবারের বিশ্বকাপের দুই চমকসৃষ্টিকারী দলের মধ্যে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে জমজমাট খণ্ডযুদ্ধও অনুষ্ঠিত হবে। নিউজিল্যান্ডের স্পিন বনাম ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। কিংবা ইংল্যান্ডের পেস বনাম নিউজিল্যান্ডে হার্ড হিটিং ব্যাটিং। কোনটা সফল হবে? জানতে অপেক্ষা করা লাগবে বুধবার রাত ৮টা পর্যন্ত। তার আধঘণ্টা আগেই অবশ্য টস হয়ে যাবে।
এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে ধারাবাহিক এবং সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নিউজিল্যান্ড। প্রথম ম্যাচ থেকেই তারা প্রমাণ করে আসছে, এবার ভারতে এসেছে বিশ্বকাপ জেতার জন্য। প্রথম ম্যাচেই ভারতকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল। এরপর জয়ের ধারা অব্যাহত ছিল অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের বিপক্ষে। নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা ভারতের স্পিনিং কন্ডিশনে নিজেদের এতোটা মানিয়ে নিয়েছে যে, তাদের খেলা দেখে মনে হচ্ছিলো, বুঝি তারা হোম কন্ডিশনে খেলছে।
নিউজিল্যান্ড দলটির সবচেয়ে সুবিধাজনক দিক হলো, ভারতে যে ধরনের উইকেটই তৈরি করা হোক না কেন, সে ধরনের উইকেটে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে তাদের হাতে অপশনের শেষ নেই। স্পিনিং ট্র্যাক হলে স্পিনার রয়েছে প্রচুর। সিমিং ট্র্যাক হলে রয়েছে বিশ্বকাপের পেসার। সাউদি, বোল্ট, মিলনে, ম্যাকক্লেনগানরা। ব্যাটসম্যানরা খেলে হাই স্ট্রাইক রেটে। গাপটিল থেকে শুরু করে লুক রনকি পর্যন্ত মারমুখি সব ব্যাটসম্যান।
সব কিছুর সঙ্গে যোগ হয়েছে উইলিয়ামসনের অসাধারণ নেতৃত্ব। উইকেট রিড করার দুর্দান্ত ক্ষমতা। পুরো টুর্নামেন্টেই অসাধারণ নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তিনি। তার নেতৃত্বেই দল জয় পেয়ে যাচ্ছে প্রায় সবগুলো ম্যাচে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো ম্যাচে রান তাড়া করতে হয়নি নিউজিল্যান্ডকে। রান চেজ করার পরীক্ষা দিতে হলে তারা কী করবে সেটা এখনো অজানা। তবে শিরোপার নিশ্চিত দাবিদার একটি দল তারা।
অপরদিকে প্রথম ম্যাচেই ১৮০’র বেশি রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে পরাজয়। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার ২২৯ রানের মহাকাব্যকে টপকে গিয়ে ইংলিশ ব্যাটসম্যানরা যা করেছে সেটা তো রীতিমত অবিশ্বাস্যই। এরপর আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ইআন মরগ্যানের দল। ওপেনার জ্যাসন রয়, আলেক্স হেলস, মিডল অর্ডারে জো রুট, জস বাটলার, ইয়ান মরগ্যান, বেন স্টোকস এবং মঈন আলি রীতিমত প্রতিপক্ষ বোলারদের জন্য বিভীষিকার নাম।
বল হাতে আদিল রশিদ আর মঈন আলি স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। বেন স্টোকসের স্লো ডেলিভারিগুলোও বেশ সমস্যায় ফেলছে ব্যাটসম্যানদের। একই সঙ্গে পেসার ডেভিড উইলি, ক্রিস জর্ডান এবং লিয়াম প্লাঙ্কেটরা রয়েছেন দুর্দান্ত ফর্মে। তারওপর দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় ইতিমধ্যেই দুটি ম্যাচ খেলে ফেলেছে ইংল্যান্ড। এখানকার কন্ডিশনকে বেশ ভালো চেনা তাদের। সুতরাং, নিউজিল্যান্ডের চেয় যে এখানে একটু এগিয়ে থাকবে তারা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
টি-টোয়েন্টিতে ১২ বার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এর মধ্যে ইংল্যান্ড জিতেছে ৮টি এবং ৪টি জিতেছে নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ২০০৮ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত টানা ৬টি ম্যাচ জিতেছে ইংল্যান্ড।