সুজন দেওয়ানঃ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার সামিরা (১৪) নামের এক গৃহকর্মীকে শীল ও বেলাইন দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ২৮শে জুলাই ঢাকার মিরপুরের একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে। সামিরা কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার পাটুয়াভাঙা ইউনিয়নের বাগপাড়া গ্রামের দিনমজুর সেলিম মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় গতকাল সকালে অভিযুক্ত গৃহকর্তা একই গ্রামের মুন্সিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ -পরিচালক (শষ্য) ড.মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ রহমান উরফে মাহবুবুর রহমান ও তার স্ত্রী বিউটি আক্তারসহ তিনজনকে অভিযুক্ত করে পাকুন্দিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন সেলিম মিয়া।
সামিরা বর্তমানে কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই মাস আগে একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী বাড়ির সরকারি চাকরিজীবী ড.মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদের ঢাকাস্থ মিরপুরের ভাড়া বাসায় সামিরাকে গৃহকর্মী হিসেবে নেয়া হয়। এর কিছুদিন পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে গৃহকর্ত্রী বিউটি আক্তার সামিরাকে বকাঝকা ও মারধর করে। একপর্যায়ে সামিরা মারধরের ভয়ে পাশের বাসায় পালিয়ে আশ্রয় নেয়। সেখান থেকে গৃহকর্তা ড. মাহবুবুর রশীদ সামিরাকে তার বাসায় নিয়ে আসে। বাসায় এনে মসলা বাটার শীল দিয়ে ড.মাহবুবুর রশীদ ও রুটি বানানোর বেলাইন দিয়ে গৃহকর্ত্রী বিউটি আক্তার সামিরার শরীরের বিভিন্ন অংশে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। একপর্যায়ে সামিরা অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
গত ৩০শে জুলাই মুমূর্ষু অবস্থায় সামিরাকে মাহবুবুর রহমান নিজ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে। বাড়িতে এনে নির্যাতনের বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে ড. মাহবুবুর রশীদ মুঠোফোনে সামিরার বাবাকে খবর দেয় তার বাড়িতে আসার জন্য। খবর পেয়ে সামিরার বাবা ওই বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তার হাতে সামিরাকে তুলে দেন। বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পর সামিরা তার ওপর অমানবিক নির্যাতনের বিষয়টি তার মা-বাবার কাছে খুলে বলে। সামিরার শারীরিক অবস্থা অবনতি হতে থাকলে গত ২রা আগস্ট বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় গৃহকর্তা ড. মাহবুবুর রশীদ । সেখানে ভর্তি না রাখায় পরে তাকে কিশোরগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে পালিয়ে আসে গৃহকর্তা । বর্তমানে সামিরা ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সামিরার বাবা সেলিম মিয়া বেস্ট নিউট ডট কম ডট বিডিকে বলেন, আমার অভাব-অনটনের সংসার। তাই মেয়ের সুখের আশায় তার বাসায় দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা মেয়ের ওপর এমন অত্যাচার-নির্যাতন করবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। অভিযুক্ত গৃহকর্তা ড.মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ উরফে মাহবুবুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তাই ঘটনার ব্যাপারে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। পাকুন্দিয়া থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. মফিজুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি বেস্ট নিউজ ডট কম ডট বিডি কে নিশ্চিত করে বলেন, যেহেতু ঘটনাটি ঢাকার মিরপুরের। তাই বাসার প্রকৃত ঠিকানা সংগ্রহ করে অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।