সুমন চৌধুরী: সারি সারি বিমান সাজিয়েও যে একটি জাদুঘর তৈরি করা যায়, তা দেখতে হলে চলে যেতে হবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গৌরবজ্জ্বল ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিমান জাদুঘর।
জাদুঘরটিতে রয়েছে জাতীয় অহংকার ও স্মৃতি বিজড়িত বিমানসমূহ। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর গৌরবময় ঐতিহ্যের ইতিহাস, সাফল্য ও উন্নয়নের ক্রমবিকাশকে সংরক্ষণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই ২০১৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বেগম রোকেয়া সরণী সংলগ্ন তেজগাঁও বিমানবন্দর রানওয়ের পশ্চিম পাশে মনোরম পরিবেশে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জাদুঘর।
জাদুঘরে দর্শনার্থীদের পানাহারের জন্য প্রাঙ্গণের দক্ষিণ দিকে নির্মাণ করা হয়েছে একটি ফুড কোর্ট। এছাড়া বিমান বাহিনীর বিভিন্ন দ্রব্যাদি দিয়ে সজ্জিত হয়েছে স্যুভেনির শপ নীলাদ্রি। শিশুদের মনোরঞ্জন ও উৎসাহ বৃদ্ধির জন্য শিশু পার্কের পাশাপাশি ফুটপাথের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে পানির ফোয়ারা, জিরাফ, শিম্পাঞ্জি, হরিণ ইত্যাদি নানা রকম পশু-পাখির প্রতিকৃতি। এটার নাম দেয়া হয়েছে ‘চিলড্রেন হেভেন’।
জাদুঘরে স্থান পাওয়া বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে-
হান্টার বিমান: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতীয় এই বিমানটির অংশগ্রহণ ও অবদানের জন্য ভারতীয় বিমান বাহিনী বাংলাদেশ বিমান বাহিনীকে বিমানটি উপহার হিসাবে দেয়।
এন-২৪ বিমান: রাশিয়ার তৈরি এই বিমানটি বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে ১৯৭৩ সালে বলাকা নামে সংযোজিত হয়। বিমানটি সরকারিভাবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ব্যবহার করতেন।
এফ-৮৬ যুদ্ধবিমান: বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই বিমানটি ব্যবহার করে। যুদ্ধে পাকবাহিনী বিমানটিকে ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় ফেলে রেখে যায়।
প্রথম বিমান বলাকা: বাংলাদেশের প্রথম যাত্রীবাহী বিমান বলাকা। রাশিয়ার তৈরি এই বিমানটি বাংলাদেশে আসে প্রথম ১৯৫৮ সালে। বর্তমানে এটা জাদুঘরে রাখা হয়েছে।
এই বিমানগুলো ছাড়াও রয়েছে আরো নানা রকম বিমান। জাদুঘরটি সোম থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শুক্র ও শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ এবং প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা।