ইরানের অর্থমন্ত্রী আবদোলনাসের হেম্মাতিকে দায়িত্ব হতে অপসারণের পক্ষে ভোট দিয়েছে দেশটির পার্লামেন্ট। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়, অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা ও মুদ্রার ব্যাপক দরপতন রোধে ব্যর্থ হওয়ার কারণে রবিবার (২ মার্চ) এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হেম্মাতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন ১৮২ জন আইনপ্রণেতা। অন্যদিকে, কেবল ৮৯ জন আইনপ্রণেতা এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান তার মন্ত্রিসভা নিয়োগ দেওয়ার প্রায় আটমাস পর পার্লামেন্টে হেম্মাতির বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোট পাস হয়। বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী, উল্লিখিত সময়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইরানের মুদ্রার প্রায় অর্ধেক অবমূল্যায়ন ঘটেছে।
অ্যালানচান্দের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী, গত আগস্টে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ইরানি রিয়ালের বিনিময়মূল্য ছিল পাঁচ লাখ ৯৫ হাজার ৫০০, যা বর্তমানে দাঁড়িয়েছে নয় লাখ ২৭ হাজারে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হেম্মাতির বিরুদ্ধে পার্লামেন্টের অভিযোগ, তিনি ওষুধ, খাদ্য ও আবাসনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় খাতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে ব্যর্থ হয়েছেন। এছাড়া তিনি বৈদেশিক বাণিজ্য বাজারও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। হেম্মাতির মূল লক্ষ্য কেবল ছিল ইরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং ফিন্যান্সিয়াল টাস্ক ফোর্স ব্ল্যাকলিস্ট থেকে ইরানের নাম অপসারণ।
এদিকে, হেম্মাতিকে অপসারণের সিদ্ধান্তে বিরোধিতা করে তার সমর্থকরা বলেছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকার কারণে এখনই অর্থমন্ত্রীকে অপসারণ করলে তা অস্থিতিশীলতা আরও বৃদ্ধি করতে পারে।
ইরানের শাসকগোষ্ঠীর জন্য অর্থনীতি প্রধান মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৭ সাল থেকে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের কারণে ক্ষুব্ধ থাকা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের মধ্যে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে তারা।